ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির সকল নিয়ম

আজকে আমরা শিখবো কীভাবে একদম ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহার করে ধাপে ধাপে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা এসইও শিখতে আগ্রহী, তারা এই পদ্ধতিতে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করে হাতে-কলমে অভ্যাস করতে পারেন।


একজন তরুণ ল্যাপটপে ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ করছেন, পাশে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং বোর্ড


ব্যক্তিগত ব্লগ হোক বা ই-কমার্স সাইট — যেকোনো অনলাইন কার্যক্রমের জন্য একটি ওয়েবসাইট থাকা জরুরি। শুরুতেই ডোমেন বা হোস্টিং কিনতে না পারলেও চিন্তার কিছু নেই। ফ্রিতে ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, একদম খরচ ছাড়াই।


ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি


ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে আমাদের প্রয়োজন হবে একটি ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং প্রোভাইডার। এই টিউটোরিয়ালে আমরা দেখবো কীভাবে InfinityFree ব্যবহার করে বিনামূল্যে ডোমেন এবং হোস্টিং রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, এবং এরপর কীভাবে সেটি ব্যবহার করে পুরোপুরি ফ্রিতে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।


প্রথমেই আপনাকে ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে একটি ব্রাউজার খুলতে হবে। চাইলে আপনি মোবাইল ফোন দিয়েও এটি করতে পারেন। তবে মোবাইল ব্যবহার করলে ব্রাউজারে "ডেস্কটপ মোড" অন করে নিলে কাজ করতে আরও সুবিধা হবে।


InfinityFree দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি

গুগলে গিয়ে "InfinityFree" লিখে সার্চ করুন। তারপর তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে ফেলুন। একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনি একটি ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন। সেখানে “Create Account” অপশনে ক্লিক করতে হবে।


আরও পড়ুনঃ ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির


InfinityFree ফ্রি হোস্টিং প্ল্যান নেওয়ার নিয়ম

“Create Account” বাটনে ক্লিক করলে আপনি চারটি আলাদা হোস্টিং প্ল্যান দেখতে পাবেন। প্রতিটি প্ল্যানের সুবিধা আলাদা, তবে আমরা যেহেতু ফ্রি প্ল্যান ব্যবহার করব, তাই প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করবো।

এই ফ্রি প্ল্যানে যা পাবেন:

  • ৫ জিবি ডিস্ক স্পেস
  • আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ
  • আনলিমিটেড হোস্টেড ডোমেইন

এই পরিমাণ রিসোর্স দিয়ে একটি সাধারণ ওয়েবসাইট চালানো সম্ভব।


ডোমেইন নাম বাছাই

হোস্টিং প্ল্যান থেকে ফ্রি অপশন সিলেক্ট করে “Create Now” বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনাকে একটি ডোমেইন বা ওয়েবসাইটের নাম লিখতে বলা হবে। আপনি যে নামটি দিতে চান তা কেউ আগে ব্যবহার করছে কি না তা “Check Availability” বাটনে ক্লিক করে যাচাই করে নিতে পারবেন। চাইলে আপনি ডোমেইনের এক্সটেনশনও পরিবর্তন করতে পারবেন।


ফ্রি হোস্টিং একাউন্ট সেটআপ

যদি আপনার দেয়া ডোমেইন নামটি ফ্রি থাকে, তাহলে আপনি পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন। এবার আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে (এখানে সংখ্যা বা সিম্বল ব্যবহার করা যাবে না)। এরপর “Email Consent” থেকে I Approve সিলেক্ট করে “Create Account” বাটনে ক্লিক করুন।


InfinityFree দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির মূল ধাপ

“Create Account” বাটনে ক্লিক করার পর আপনি একটি নতুন ড্যাশবোর্ডে চলে যাবেন, যেটি কিছু সময় লোড হতে পারে। এই ড্যাশবোর্ড থেকেই ওয়েবসাইট তৈরির পুরো প্রক্রিয়া শুরু হবে।


ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার নিয়ম

ড্যাশবোর্ডে গিয়ে Script Installer অপশনে ক্লিক করুন। এরপর নতুন একটি পেইজ ওপেন হবে, যেখানে অনেকগুলো স্ক্রিপ্টের তালিকা থাকবে। এখান থেকে WordPress নির্বাচন করুন এবং Install বাটনে ক্লিক করুন। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আপনার নতুন ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে যাবে।


আপনি চাইলে এখান থেকে ওয়ার্ডপ্রেসের থিম, প্লাগইন ইত্যাদি কাস্টমাইজ করে নিজের মতো করে ওয়েবসাইট সাজাতে পারবেন।


InfinityFree হোস্টিং একাউন্ট কিভাবে তৈরি করবেন?



InfinityFree হলো একটি সম্পূর্ণ ফ্রি ডোমেইন এবং হোস্টিং সেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম। আগের অংশে আমরা ধাপে ধাপে দেখেছি কীভাবে InfinityFree ব্যবহার করে ফ্রি হোস্টিং ও ডোমেইন নিয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় — ছবিসহ বিস্তারিতভাবে। এবার আমরা দেখবো কিভাবে আপনি নিজেই InfinityFree-তে একটি হোস্টিং অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।


আরও পড়ুনঃ Home Income ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি ল্যাপটপ লাগবেই?


এই কাজটি শুরু করতে হলে প্রথমে আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের যেকোনো একটি ইন্টারনেট ব্রাউজার ওপেন করুন। তারপর সেখানে গিয়ে “InfinityFree” লিখে সার্চ দিন।


InfinityFree হোস্টিং অ্যাকাউন্ট তৈরির ধাপ


সার্চ করলে প্রথমেই InfinityFree এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখতে পাবেন। তবে ক্লিক করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এটি তাদের আসল (official) সাইট কি না। এরপর সাইটে প্রবেশ করলে একটি ড্যাশবোর্ডের মতো পেজ দেখতে পাবেন (যেটি উপরের ছবিতে দেখানো হয়েছে)।


এখান থেকে আপনাকে “Register” অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।


Register বাটনে ক্লিক করলে একটি সাইন আপ ফর্ম চলে আসবে, যেখানে আপনাকে একটি বৈধ ইমেইল অ্যাড্রেস ও একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যদি আপনি সহজ উপায়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে “Sign up with Google” অপশন বেছে নিতে পারেন। এই অপশন ব্যবহার করলে আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়েই সরাসরি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।


আরও পড়ুনঃ বিকাশ লোন এখন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবেন!


সাইন আপ হয়ে গেলেই আপনার InfinityFree হোস্টিং অ্যাকাউন্ট তৈরির কাজ শেষ – এখন আপনি ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করে ওয়েবসাইট সেটআপের পরবর্তী ধাপে এগোতে পারবেন।


ওয়েবসাইটের জন্য প্রাথমিক সেটআপ ও কনফিগারেশন


উপরে আমরা দেখেছি কীভাবে InfinityFree ব্যবহার করে একদম বিনামূল্যে ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়ে একটি WordPress ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। এখন যেহেতু আমাদের ওয়েবসাইটটি তৈরি হয়ে গেছে, তাই কিছু প্রাথমিক সেটআপ ও কনফিগারেশন ঠিক করে নেওয়া জরুরি। কারণ, একটি নতুন তৈরি করা ওয়েবসাইট শুরুতেই খুব এলোমেলো ও অপরিচ্ছন্ন দেখায়। এই সেটআপগুলো করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে আরও ব্যবহারযোগ্য এবং প্রস্তুত করে তোলা হয়।


একজন তরুণ ল্যাপটপে ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ করছেন, পাশে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং বোর্ড


এখন চলুন ধাপে ধাপে দেখে নিই কীভাবে আপনার WordPress ওয়েবসাইটের প্রাথমিক কনফিগারেশন সম্পন্ন করবেন।


🔧 ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের প্রাথমিক সেটআপ গাইড

ওয়েবসাইট অ্যাডমিন প্যানেলে লগইন করুন
ব্রাউজারে গিয়ে আপনার ডোমেইনের শেষে /wp-admin লিখে সার্চ দিন।
উদাহরণ: yourdomain.infinityfreeapp.com/wp-admin
এরপর আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

ড্যাশবোর্ডের অপ্রয়োজনীয় স্ক্রিন এলিমেন্টস বন্ধ করুন
লগইন করার পর, ড্যাশবোর্ড থেকে উপরের দিকে থাকা “Screen Options” বাটনে ক্লিক করুন।
সেখান থেকে যেসব স্ক্রিন এলিমেন্ট প্রয়োজন নেই, সেগুলোর টিক তুলে দিন – এতে ড্যাশবোর্ড আরও পরিষ্কার দেখাবে।

ডিফল্ট পোস্ট ডিলিট করুন
“Posts” মেনুতে গিয়ে দেখবেন একটি Hello World! নামে ডিফল্ট পোস্ট রয়েছে। এটিকে ডিলিট করে দিন।

অপ্রয়োজনীয় প্লাগইনগুলো রিমুভ বা ডিসঅ্যাক্টিভ করুন
“Plugins” মেনুতে গিয়ে অটোমেটিকভাবে ইনস্টল হয়ে আসা যেসব প্লাগইন আছে, সেগুলো ডিসঅ্যাক্টিভ করুন এবং চাইলে ডিলিটও করে দিতে পারেন।

অযাচিত ইউজার রিমুভ করুন
“Users” অপশনে গিয়ে দেখুন সেখানে আপনি ছাড়া অন্য কেউ আছে কি না।
যদি থাকে এবং প্রয়োজন না হয়, তাহলে সেই ইউজারকে রিমুভ করে দিন।

সাইট সেটিংস কাস্টমাইজ করুন
“Settings” মেনুতে গিয়ে নিচের জিনিসগুলো আপনার পছন্দমতো ঠিক করে নিতে পারেন:

  • Tagline (সাইটের পরিচিতি বাক্য)
  • Site Icon বা ফ্যাভিকন
  • Date Format ও Time Format


এই সেটআপগুলো করে ফেললে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট অনেক বেশি পরিপাটি, প্রস্তুত ও ইউজার-ফ্রেন্ডলি হয়ে উঠবে। এখন আপনি চাইলে থিম ও প্লাগইন ইনস্টল করে কাস্টম ডিজাইন শুরু করতে পারেন।


ফ্রি থিম ও প্লাগইন ইনস্টল করে ওয়েবসাইট ডিজাইন


একটি ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় ও কার্যকর করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো থিম নির্বাচন। আপনার কাজের ধরণ অনুযায়ী সঠিক থিম বেছে নেয়া খুবই প্রয়োজন। যেমন, যদি আপনি ব্লগিংয়ের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান, তাহলে ব্লগিং সম্পর্কিত থিম ব্যবহার করা উচিত। আবার, ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য ওয়েবসাইট বানালে একটি পোর্টফোলিও ধরনের থিম বেছে নিতে হবে। একইভাবে, যদি কোনো প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চান, তাহলে ই-কমার্স থিম ব্যবহার করাই ভালো।

ওয়েবসাইটের কাজগুলো আরও সহজ ও কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন প্লাগইন ব্যবহার করা হয়। এখন আমরা ফ্রি থিম ও প্লাগইন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট ডিজাইন করার বেসিক ধাপগুলো জানবো।

  • প্রথমে ওয়েবসাইটের ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ডে লগইন করতে হবে।
  • তারপর Appearance অপশনে ক্লিক করুন।
  • ডিফল্টভাবে থাকা থিমগুলো এখান থেকে রিমুভ করতে পারবেন।
  • এরপর Add Theme অপশনে যান।
  • এখানে হাজার হাজার থিম দেখতে পাবেন।
  • আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী থিম খুঁজতে চাইলে Search Themes এ সার্চ দিতে পারেন।
  • পছন্দের থিম পেলে, সেটি প্রিভিউ করে দেখতে পারবেন।
  • যখন থিমটি পছন্দ হবে, Install অপশনে ক্লিক করুন।
  • ইনস্টল হয়ে গেলে Active বাটনে ক্লিক করে থিমটি সক্রিয় করুন।
  • একইভাবে, পছন্দমতো প্লাগইনও ইনস্টল ও অ্যাক্টিভেট করতে পারেন।

ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা


ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহারের কিছু অসাধারণ সুবিধা থাকলেও এর সাথে কিছু বড় ধরনের অসুবিধাও জড়িয়ে রয়েছে। প্রথমেই সুবিধার কথা বললে, সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এর জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। অর্থাৎ, বিনামূল্যে আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটি চালাতে পারবেন। এটি বিশেষ করে যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা ডিজাইন শেখার আগ্রহী, তাদের জন্য খুবই উপকারী কারণ তারা ঝুঁকি ছাড়াই প্র্যাকটিস করতে পারেন। এই কারণে নতুনদের জন্য ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।


তবে, সুবিধার পাশাপাশি এর অসুবিধাগুলোও বেশ বড়। ফ্রি হোস্টিং সাধারণত শেয়ার্ড হোস্টিং হয়, যার মানে আপনার ওয়েবসাইটের সাথে একাধিক ওয়েবসাইট একই সার্ভার ব্যবহার করে। ফলে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অনেক ধীর হয়, যা ব্যবহারকারীর জন্য বিরক্তিকর হতে পারে। এছাড়া, ফ্রি ডোমেন আসলে সম্পূর্ণ নিজস্ব ডোমেন নয়, বরং এটি সাবডোমেন হিসেবে দেয়া হয়। যেমন, yoursite.freehosting.com এর মতো সাবডোমেন। এর ফলে সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের র‌্যাংকিং করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর।


সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো নিরাপত্তা। ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা যথেষ্ট শক্তিশালী হয় না। অনেক সময় প্রোভাইডারগণ যেকোনো সময় ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দিতে পারেন বা হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ফলে আপনি দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম ও সময় বিনিয়োগ করেও নিজের ওয়েবসাইট হারাতে পারেন।


সুতরাং, যদি আপনার কাজ বা প্রজেক্টটি গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি সফলতা চান, তাহলে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিংয়ের বদলে পেইড সার্ভিস বেছে নেওয়া অনেক বেশি ভালো। কারণ এতে আপনি পেশাদার মানের সার্ভিস পাবেন, নিরাপত্তা থাকবে, এবং ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্সও উন্নত হবে।


সব মিলিয়ে বলা যায়, ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহারের সুবিধাগুলো আছে, কিন্তু অসুবিধাগুলো অনেক বেশি হওয়ায় এটি বড় কোনো প্রকল্পের জন্য আদর্শ নয়।


কাদের জন্য ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং দিয়ে ওয়েবসাইট ব্যবহার উচিত নয়


যারা ব্যক্তিগত বা প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য কখনোই ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ ফ্রি ওয়েবসাইটে সাধারণত ব্যান্ডউইথ সীমিত থাকে এবং লোডিং স্পিড অনেক ধীর হয়, যা ওয়েবসাইট পরিচালনাকে বেশ কঠিন করে তোলে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ফ্রি হোস্টিং প্রোভাইডাররা আপনার ওয়েবসাইটে নিজস্ব বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটের মান কমে যায়, আর যদি আপনি ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে চান, তাহলে গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়।


আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যারা ফ্রিল্যান্সার, ওয়েব ডিজাইনার, ব্লগার বা ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কাজ করেন, তাদের জন্যও ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং মোটেও ভালো বিকল্প নয়। এই ধরনের ওয়েবসাইটে কাস্টমাইজেশন অনেক সীমিত থাকে এবং গুগল র‌্যাংকিংয়ের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ফ্রি ওয়েবসাইটে দেয়া সাবডোমেনের মান সাধারণত নিম্নমানের হয়, ফলে যতই ভালো SEO করলেও আপনার কন্টেন্ট গুগলে ভালো র‌্যাংক পায় না।


সারসংক্ষেপে, যদি আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কাজে সিরিয়াস হন এবং ভালো ফলাফল চান, তাহলে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং ব্যবহার থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ।


ওয়েবসাইটে প্রিমিয়াম হোস্টিং আপডেট করা কেন গুরুত্বপূর্ণ


ওয়েবসাইট তৈরি ও পরিচালনার ক্ষেত্রে হোস্টিং-এর গুরুত্ব অপরিসীম। অনেকেই শুরুতে ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করেন, তবে প্রফেশনাল ও সফল ওয়েবসাইটের জন্য প্রিমিয়াম হোস্টিং ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ প্রিমিয়াম হোস্টিং শুধু ওয়েবসাইটের গতি ও নিরাপত্তা বাড়ায় না, পুরো পারফরম্যান্সকেও উন্নত করে।


প্রিমিয়াম হোস্টিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুত লোডিং স্পিড পাওয়া। ফ্রি হোস্টিংয়ে সাধারণত একাধিক ওয়েবসাইট একই সার্ভারে হোস্ট করা হয়, তাই লোডিং স্পিড কমে যায়। কিন্তু প্রিমিয়াম হোস্টিংয়ে ডেডিকেটেড রিসোর্স থাকার কারণে ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত লোড হয়।


SEO র‍্যাংকিংয়ের জন্য সাইটের গতি, আপটাইম এবং সার্ভার স্থায়ীত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্সকে র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে। তাই যারা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে রাখতে চান, তাদের জন্য প্রিমিয়াম হোস্টিং অপরিহার্য।


আরও পড়ুনঃ ইউটিউবের মাধ‍্যমে আয় করে কীভাবে


প্রিমিয়াম হোস্টিং সাধারণত উন্নত নিরাপত্তা ফিচার যেমন ফায়ারওয়াল, SSL সার্টিফিকেট এবং নিয়মিত ব্যাকআপ প্রদান করে, যা হ্যাকিং ও ডেটা হারানোর ঝুঁকি কমায়। অধিকাংশ প্রিমিয়াম হোস্টিং প্রোভাইডার ২৪/৭ টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকে, যা যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানে সাহায্য করে।


প্রিমিয়াম হোস্টিং ব্যবহারকারীরা ইমেইল হোস্টিং, কাস্টম CDN ইন্টিগ্রেশন এবং আরও উন্নত কাস্টমাইজেশন সুবিধাও পান। এসব ফিচার ওয়েবসাইটকে আধুনিক ও পেশাদার করে তোলে, যা দর্শকদের আকৃষ্ট করে এবং ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করে।


ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিংয়ের জন্য সেরা ৫টি প্ল্যাটফর্ম

আগে আমরা InfinityFree ব্যবহার করে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং নিয়ে কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, তা শিখেছি। এখন ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিংয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ৫টি প্ল্যাটফর্মের নাম নিচে দেওয়া হলো:

  • InfinityFree
  • AwardSpace
  • 000WebHost
  • FreeHosting
  • Byet Host


ওয়েবসাইটে ডোমেন ও হোস্টিং কি ও এদের কাজ কি জানুন


ডোমেন এবং হোস্টিং হলো একটি ওয়েবসাইট তৈরির দুটি মূল ভিত্তি। ডোমেন হলো ওয়েবসাইটের নাম বা ঠিকানা, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে আপনার সাইট খুঁজে পায়। উদাহরণস্বরূপ, ordinaryit.com। এটি একটি ইউনিক নাম যা আপনার ওয়েবসাইটকে অন্যদের থেকে আলাদা করে চিনতে সাহায্য করে। আর হোস্টিং হলো সেই জায়গা যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের সব ফাইল, ছবি এবং কনটেন্ট সংরক্ষিত থাকে। সহজ কথায়, ডোমেন হলো বাসার ঠিকানা আর হোস্টিং হলো সেই বাসার ভেতরের ঘরবাড়ি।


একজন তরুণ ল্যাপটপে ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ করছেন, পাশে ফ্রি ডোমেন ও হোস্টিং বোর্ড


যখন কেউ আপনার ডোমেনে ক্লিক করে, তখন হোস্টিং সার্ভার থেকে ওয়েবসাইটের সব তথ্য তাদের ব্রাউজারে পাঠানো হয়। এই সার্ভারটি ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে যাতে যেকোনো সময় আপনার ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করা যায়। ভালো মানের হোস্টিং ওয়েবসাইটের গতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। একই সাথে, একটি পেশাদার ডোমেন নাম ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিশ্বাস ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে।


আরও পড়ুনঃ গুগল পে চালু হলো বাংলাদেশে


সুতরাং, ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে ডোমেন ও হোস্টিং—উভয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।


Next Post Previous Post