ইমেইল মার্কেটিং করে আয় করার সেরা ৫টি উপায়

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইমেইল মার্কেটিং একদম সহজ, কার্যকর এবং লাভজনক একটি অনলাইন ইনকামের মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে হাজারো মানুষ প্রতিদিন এই পদ্ধতি ব্যবহার করে বাড়তি আয় করছেন বা ফুলটাইম ক্যারিয়ার গড়ছেন। আপনি যদি নিয়মিত সময় দিতে পারেন এবং কিছুটা ধৈর্য ধরে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেন, তাহলে আপনিও খুব সহজে ইমেইল মার্কেটিং থেকে আয় শুরু করতে পারবেন।


ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে আয় করার সেরা ৫টি উপায়


এই পোস্টে আমরা জানব কীভাবে ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কার্যকরভাবে আয় করা যায় এবং সেই সঙ্গে দেখে নেব সেরা ৫টি প্রমাণিত উপায় যা আপনাকে শুরু করতে ও সফল হতে সহায়তা করবে।


ইমেইল মার্কেটিং করার রয়েছে নানা ধরণের কৌশল ও পদ্ধতি। তবে আজকের আলোচনায় আমরা বেছে নিয়েছি সবচেয়ে সহজ এবং লাভজনক ৫টি মেথড, যেগুলো অনুসরণ করে আপনি অল্প সময়েই আয় শুরু করতে পারেন।


এই উপায়গুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে একজন নতুন ব্যবহারকারীও ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে পারেন। যদি আপনি এই নিয়মগুলো মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করেন এবং সঠিকভাবে প্রয়োগ করেন, তবে ইমেইল মার্কেটিং থেকে আয় করা আপনার জন্য খুব একটা কঠিন হবে না।


ইমেইল মার্কেটিং করে আয় করার সেরা ৫টি উপায়


বর্তমানে অনলাইনে আয় করার যতগুলো বিশ্বস্ত এবং কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে, তার মধ্যে ইমেইল মার্কেটিং অন্যতম একটি জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। শুধু নিজের জন্যই নয়, চাইলে আপনি এটি ব্যবহার করে দেশি ও বিদেশি ক্লায়েন্টদের জন্যও কাজ করতে পারেন এবং আয় বাড়াতে পারেন বহুগুণ।


আজকের এই লেখায় আমরা আলোচনা করব, কীভাবে আপনি ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন এবং বিশেষ করে এমন ৫টি সহজ ও লাভজনক উপায় নিয়ে কথা বলব, যেগুলো নতুনদের জন্যও একদম উপযোগী।


ইমেইল মার্কেটিং শেখার পর আপনি শুধু নিজের ডিজিটাল পণ্য, সার্ভিস বা অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রমোট করেই আয় করতে পারবেন না—আপনি চাইলে Fiverr, Upwork, Freelancer-এর মতো আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে ক্লায়েন্টদের জন্য ইমেইল ক্যাম্পেইন ডিজাইন ও ম্যানেজ করে আয় করতে পারেন। এমনকি দেশের মধ্যেও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা ইমেইল মার্কেটিংয়ের জন্য লোক খোঁজে।


১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় উপায়


ইমেইল মার্কেটিং থেকে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই পদ্ধতিতে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের অ্যাফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করে তা ইমেইলের মাধ্যমে আপনার সাবস্ক্রাইবারদের কাছে পাঠাবেন।
যদি কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্টটি কিনে নেয়, তাহলে আপনি প্রতিটি বিক্রির বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট কমিশন পাবেন।

Amazon, ClickBank, ShareASale বা Impact-এর মতো অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনি সহজেই এই কাজ শুরু করতে পারেন।

 নতুনদের জন্য এই মেথডটি সবচেয়ে দ্রুত ফল পাওয়া যায় এমন একটি প্যাসিভ ইনকাম সোর্স।


২. নিজের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয়


আপনার যদি নিজস্ব কোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট থাকে, তাহলে ইমেইল মার্কেটিং সেটি বিক্রি করার অন্যতম চমৎকার মাধ্যম হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ:

  • ই-বুক
  • অনলাইন কোর্স
  • সফটওয়্যার
  • ডিজাইন টেমপ্লেট
  • মেম্বারশিপ সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদি।

ইমেইলের মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার প্রোডাক্ট প্রোমোট করে আগ্রহী গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এই ধরনের প্রোডাক্ট একবার তৈরি করলে তা বারবার বিক্রি করা যায়, যা থেকে আপনি নিয়মিত প্যাসিভ ইনকাম উপার্জন করতে পারেন।


৩. নিজের সার্ভিস প্রোমোট করে ক্লায়েন্ট পাওয়া

আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট স্কিল থাকে যেমন:

  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • SEO বা ডিজিটাল মার্কেটিং

  • তাহলে ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি সেই সার্ভিস প্রোমোট করে সরাসরি ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে প্রজেক্ট নিতে পারেন।

অনেক সময় লোকাল ব্যবসা কিংবা অনলাইন উদ্যোক্তারা ভালো সার্ভিস খুঁজছেন—আপনি যদি সঠিকভাবে টার্গেট করেন, তাহলে নিয়মিত ক্লায়েন্ট পাওয়া কঠিন কিছু নয়।


৪. পেইড নিউজলেটার সাবস্ক্রিপশন চালু করে আয়


পেইড নিউজলেটার হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি নির্দিষ্ট একটি বিষয় (যেমন: প্রযুক্তি টিপস, ফিনান্স পরামর্শ, হেলথ গাইড, কোডিং ইত্যাদি) নিয়ে নিয়মিত ভ্যালুসমৃদ্ধ কনটেন্ট তৈরি করেন এবং আগ্রহী পাঠকদের কাছে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠান।


এই সাবস্ক্রিপশন পরিষেবা ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের মাসিক বা বাৎসরিক একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়।


এভাবে আপনি আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে একটি নির্ভরযোগ্য ইনকাম সোর্স তৈরি করতে পারেন।


৫. স্পন্সরশিপ ও অ্যাডস দিয়ে আয়

যদি আপনার কাছে একটি বড় ইমেইল সাবস্ক্রাইবার লিস্ট থাকে, তাহলে আপনি স্পন্সরশিপ ও বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে সহজেই ইনকাম করতে পারেন।
অনেক ব্র্যান্ড ও কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করার জন্য স্পন্সর ইমেইল ক্যাম্পেইনের আশ্রয় নেয়।

আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে সরাসরি স্পন্সরশিপ নিতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট অ্যাড প্লেসমেন্টের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।


তবে এই মডেল ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে একটি বড়, অ্যাকটিভ ও নির্ভরযোগ্য ইমেইল লিস্ট গড়ে তুলতে হয়।


ইমেইল মার্কেটিং কি এবং এটি কিভাবে করতে হয়?


এখন আমরা জানব, ইমেইল মার্কেটিং কীভাবে করতে হয়।সবার আগে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো ইমেইল সংগ্রহ, যাকে বলা হয় ইমেইল লিস্ট বিল্ডিং

এই কাজটি আপনি সহজেই করতে পারেন—আপনার ওয়েবসাইটে একটি সাবস্ক্রিপশন ফর্ম যুক্ত করে, কিংবা ফ্রি গাইড, ই-বুক অথবা ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে আগ্রহী মানুষদের ইমেইল সংগ্রহ করে।

এরপর নিয়মিতভাবে সাবস্ক্রাইবারদের কাছে ভ্যালুসমৃদ্ধ ও সহায়ক কনটেন্ট পাঠাতে হবে, যাতে তারা আপনার প্রতি বিশ্বাস গড়ে তোলে।


এই ইমেইলগুলো পাঠানোর জন্য আপনি চাইলে Mailchimp, ConvertKit বা MailerLite এর মতো জনপ্রিয় টুল ব্যবহার করতে পারেন।


যখন আপনার পাঠকরা পর্যাপ্ত আস্থা অর্জন করবে, তখন আপনি তাদের কাছে উপযুক্ত সময়ে প্রাসঙ্গিক অফার পাঠিয়ে আয় করতে পারবেন।


এটি ছিল ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করার একটি কার্যকর উপায়।
উপরে আরও যেসব পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে, চাইলে সেগুলোও পড়ে নিতে পারেন।


নিজের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য ইমেইল করার টিপস



১. নিজের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করতে হলে শুধু ইমেইল পাঠানো যথেষ্ট নয়, এর সঙ্গে কিছু কার্যকর কৌশল মেনে চলাও জরুরি।

২. প্রথমে জানতে হবে—আপনার অডিয়েন্স আসলে কোন বিষয় নিয়ে বেশি আগ্রহী বা কোন সমস্যার সমাধান খুঁজছে।

৩. সেই তথ্য বুঝে ইমেইলের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, যাতে পাঠক নিজেকে আপনার বার্তার সঙ্গে যুক্ত মনে করে।

৪. ইমেইলের শুরুতেই এমন একটি আকর্ষণীয় সাবজেক্ট লাইন দিতে হবে যা দেখে পাঠক ইমেইলটি খুলতে আগ্রহী হয়।

৫. এরপর সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করুন—আপনার প্রোডাক্ট কী এবং এটি কীভাবে তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারে বা সমস্যা সমাধান করতে পারে।

৬. ইমেইলের শেষে অবশ্যই একটি পরিষ্কার এবং চোখে পড়ার মতো Call to Action যুক্ত করতে হবে, যেমন “এখনই কিনুন” বা “আরও জানুন”।

৭. আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—ইমেইলের ভাষা যেন পেশাদার হলেও পাঠকের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে।

৮. অনেকেই শুধু বিক্রির চিন্তায় বারবার সেলসধর্মী কথা বলেন, যা পাঠকের কাছে বিরক্তিকর হয়ে ওঠে।

৯. এর পরিবর্তে আপনি চাইলে নিজের কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা সন্তুষ্ট গ্রাহকের সংক্ষিপ্ত রিভিউ যোগ করতে পারেন।

১০. মাঝে মাঝে ডিসকাউন্ট, ফ্রি বোনাস বা সীমিত সময়ের অফার দিলে পাঠকের আগ্রহ ও রেসপন্স অনেক বেড়ে যায়।

১১. নিয়মিত ফলোআপ ইমেইল পাঠানোও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, তবে অবশ্যই সময়ের ব্যবধান রেখে যেন তা স্প্যাম মনে না হয়।

১২. এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে ইমেইল পাঠালে আশা করা যায় আপনি আপনার ডিজিটাল প্রোডাক্ট সফলভাবে বিক্রি করতে পারবেন।

কাস্টম সার্ভিস অফার করে ক্লায়েন্ট জেনারেট করার কৌশল



অনলাইনে ক্লায়েন্ট খোঁজা অনেকের কাছে কঠিন মনে হলেও, আপনি যদি সঠিকভাবে কাস্টমাইজড সার্ভিস অফার করতে পারেন, তাহলে কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে—আপনার সার্ভিস কোন সমস্যার সমাধান করে এবং এটি কাদের প্রয়োজন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেকেই এই জায়গায় ভুল করেন। ধরুন, কেউ একজন গ্রাফিক ডিজাইনার খুঁজছেন, কিন্তু আপনি তাকে বারবার ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের অফার পাঠাচ্ছেন। এতে সেই ব্যক্তি আপনার ইমেইলকে গুরুত্ব দেবে না, বরং বিরক্ত হয়ে মেইল না খুলেই ডিলিট করে দিতে পারে। বাস্তবে অনেক পাঠক ইমেইলের সাবজেক্ট লাইন দেখেই সেটিকে স্প্যাম ভেবে উপেক্ষা করে। তাই সফলভাবে ক্লায়েন্ট টার্গেট করতে হলে আগে ভালোভাবে রিসার্চ করতে হবে—আপনার সার্ভিস কার দরকার, তারা কোন সমস্যা মোকাবিলা করছে, এবং কীভাবে আপনি তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারেন। যত বেশি প্রাসঙ্গিক এবং উদ্দেশ্যভিত্তিক অফার পাঠাবেন, তত দ্রুত আপনি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে সাড়া পাবেন।


ইমেইল লিস্ট তৈরির স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন



ইমেইল মার্কেটিংয়ে সফল হতে হলে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো একটি ভালো মানের এবং অ্যাকটিভ ইমেইল লিস্ট তৈরি করা। অনেক সময় দেখা যায়, কেউ দীর্ঘ সময় ধরে অনেক কষ্ট করে বিশাল একটি ইমেইল লিস্ট তৈরি করে ফেলেছেন, কিন্তু সে জানেই না এই ইমেইলগুলো আসলেই ভ্যালিড কিনা কিংবা এই ব্যক্তিরা তার সার্ভিসে আগ্রহী কি না। অনেকে আবার ভ্যালিড ইমেইল সম্পর্কে সচেতন নন।


ভ্যালিড ইমেইল বলতে সেই ইমেইলগুলোকে বোঝায়, যেখানে ইমেইল পাঠালে তা ঠিকভাবে প্রাপকের ইনবক্সে পৌঁছায় এবং bounce বা ব্যর্থ হয় না।
ইমেইল সংগ্রহ করার সময় অনেকেই ভুল ইমেইল দিয়ে দেয় বা এমন ইমেইল দেয় যেগুলো বন্ধ, নিষ্ক্রিয় বা আর কেউ ব্যবহারই করে না।


ফলে আপনি যদি সেই ভুল বা অকার্যকর ইমেইলগুলোতে মেইল পাঠান, তাহলে তা পৌঁছাবে না এবং আপনার মার্কেটিং প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হবে।


তাই শুরু থেকেই নিশ্চিত হতে হবে—আপনার ইমেইল লিস্টে থাকা প্রতিটি ঠিকানা যেন ভ্যালিড, সক্রিয় এবং টার্গেট অডিয়েন্সের অন্তর্ভুক্ত হয়।


ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে আয় করার সেরা ৫টি উপায়


এই ধরনের সমস্যার সমাধানে এখন অনেক কার্যকর ইমেইল ভ্যালিডেটর টুল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার সংগ্রহ করা ইমেইলগুলো যাচাই করে দেখতে পারেন—কোনটি সচল (valid) এবং কোনটি অকার্যকর (invalid)। যেহেতু অনেক টুল ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়, তাই নির্ভয়ে এগুলো ব্যবহার করে ইমেইল লিস্টকে পরিষ্কার ও কার্যকর করে তুলতে পারেন।


এরপর আপনার যেই সার্ভিস বা অফার রয়েছে, সেটির জন্য একটি সাবস্ক্রিপশন ফর্ম সহ ল্যান্ডিং পেজ বা ওয়েবসাইট রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফর্মটি যেন একদম সহজ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুধু ব্যবহারকারীর নাম এবং ইমেইল অ্যাড্রেস চাওয়াই যথেষ্ট—অতিরিক্ত তথ্য চাইলে অনেকেই ফর্ম পূরণ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।


সাইন আপ করা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার জন্য শুরুতেই একটি ওয়েলকাম ইমেইল পাঠানো উচিত। এতে তারা আপনাকে ইতিবাচকভাবে মনে রাখবে এবং ভবিষ্যতের ইমেইলের প্রতি আগ্রহী হবে।


এই প্রক্রিয়ায় আপনি ফেসবুক অ্যাডস, ইউটিউব ভিডিও, ব্লগপোস্ট অথবা অন্য যেকোনো সোর্স থেকে ট্রাফিক এনে সাবস্ক্রাইবার তৈরি করতে পারেন। তবে শুধু ভিউ বাড়ানোই যথেষ্ট নয়—যত বেশি মানুষ আপনার কনটেন্টের সঙ্গে ইনগেজ হবে, তত বেশি সম্ভাবনা থাকবে আয় করার। তাই ট্রাফিকের মান ও ইনগেজমেন্ট—দু'টোই সমান গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।


কনভার্সন বাড়াতে ইমেইলে কি ধরনের কনটেন্ট পাঠানো উচিত?



ইমেইল মার্কেটিংয়ে কনভার্সন বাড়ানো মানে হলো পাঠককে শুধু ইমেইল পড়ানো নয়—তাকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করা, যেমন: প্রোডাক্ট কেনা, সাইন আপ করা বা কোনো লিংকে ক্লিক করা।


এজন্য কী ধরনের কনটেন্ট পাঠানো উচিত, সেটি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি না জেনে শুধু ইমেইল পাঠাতে থাকেন, দিনে হাজারটি মেইল গেলেও তার থেকে কোনো রেজাল্ট নাও আসতে পারে।


কনভার্সন না হলে আপনি শুধু সময় ও শ্রম ব্যয় করবেন, কিন্তু আয় হবে না।
তাই ইমেইল পাঠানোর আগে অবশ্যই ভালোভাবে রিসার্চ করে, অডিয়েন্স বুঝে, প্রাসঙ্গিক ও ভ্যালুসমৃদ্ধ কনটেন্ট তৈরি করে তবেই তা পাঠানো উচিত।


এখন চলুন, সংক্ষেপে জেনে নিই—কনভার্সন বাড়াতে ইমেইলে কী ধরনের কনটেন্ট পাঠানো সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে:


সমস্যা ও সমাধান ভিত্তিক কনটেন্ট:
গ্রাহকের একটি নির্দিষ্ট সমস্যা তুলে ধরে সেটির বাস্তবসম্মত সমাধান দিন।


ক্লায়েন্ট রিভিউ ও কেস স্টাডি শেয়ার:
পূর্বের সফলতা বা সন্তুষ্ট ক্লায়েন্টের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে।


ডিসকাউন্ট, অফার বা লিমিটেড টাইম ডিল:
সীমিত সময়ের অফার পাঠালে পাঠক তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিতে আগ্রহী হয়।


ফ্রি রিসোর্স বা ই-বুক প্রদান:
মূল্যবান কিছু ফ্রিতে দিলে পাঠক আগ্রহী হয় এবং আপনার প্রতি বিশ্বাস তৈরি হয়।


ইন্টার‍্যাকটিভ বা প্রশ্নভিত্তিক কনটেন্ট:
“আপনি কোনটা পছন্দ করেন?”, “এই সমস্যায় পড়েছেন কি?”—এই ধরনের প্রশ্নে রেসপন্স বাড়ে।


Step-by-step গাইড বা How-to কনটেন্ট:
কোনো বিষয় শেখাতে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা দিলে তা পাঠকের কাজে আসে।


ব্যক্তিগত গল্প বা বাস্তব জীবনের উদাহরণ:
নিজের অভিজ্ঞতা বা বাস্তব ঘটনাভিত্তিক কনটেন্ট পাঠককে আরও কাছাকাছি আনে।


Before vs After ফলাফল তুলে ধরা:
সার্ভিস ব্যবহারের আগে ও পরে কী পরিবর্তন এসেছে, তা চিত্রসহ দেখালে ইম্প্যাক্ট বেশি হয়।


প্রশ্নোত্তর (Q&A) ফরম্যাটে ইমেইল:
পাঠকের সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো একত্র করে উত্তর দিলে তাদের জড়তা কমে।


স্পষ্ট Call to Action (CTA) বাটন:
ইমেইলের শেষে অবশ্যই একটি স্পষ্ট ও আকর্ষণীয় CTA দিন, যেমন “এখনই কিনুন”, “বিস্তারিত দেখুন” ইত্যাদি।


ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে আয় করার সেরা ৫টি উপায়


ইমেইল মার্কেটিংয়ে সফল হতে হলে যেসকল ভুল করা উচিত নয়



ইমেইল মার্কেটিংয়ে সফল হতে চাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। কারণ এই দিকগুলো উপেক্ষা করলে আপনি যতই পরিশ্রম করুন না কেন, কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না। অনেকেই নতুনভাবে কাজ শুরু করার পরেও শুধু কিছু সাধারণ ভুলের কারণে সময়, শ্রম এবং সম্ভাবনা—সবকিছুই নষ্ট করে ফেলেন।


আপনি যদি ইমেইল মার্কেটিংয়ে নতুন হন, তাহলে নিচের ভুলগুলো এড়িয়ে চলাই হবে আপনার প্রথম চ্যালেঞ্জ।


এগুলো মেনে চললে কনভার্সন যেমন বাড়বে, তেমনি আয়ও আসবে নিয়মিত।


একসাথে অনেককে স্প্যামিং করে ইমেইল পাঠানো:
যাকে ইমেইল পাঠাচ্ছেন, সে যদি আগ্রহী না হয় বা অনুমতি না দেয়, তাহলে সেটি স্প্যাম হয়ে যায়। এতে বিশ্বাস নষ্ট হয়।


দুর্বল বা বিভ্রান্তিকর সাবজেক্ট লাইন ব্যবহার:
সাবজেক্ট লাইন আকর্ষণীয় না হলে ইমেইল ওপেনই হবে না। আবার ভুল বা বিভ্রান্তিকর টাইটেল পাঠকের বিরক্তির কারণ হতে পারে।


ইমেইলে ব্যক্তিগত বা আনপ্রফেশনাল তথ্য রাখা:
ইমেইল কনটেন্টে পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক বা অতিরিক্ত ব্যক্তিগত তথ্য পাঠকের অনাস্থা তৈরি করতে পারে।


একই ইমেইলে একাধিক Call to Action (CTA) রাখা:
একটি ইমেইলে শুধু একটি মূল উদ্দেশ্য থাকা উচিত। অনেকগুলো CTA দিলে পাঠক বিভ্রান্ত হয় এবং কোনো পদক্ষেপই নেয় না।


মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন না করা:
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল থেকেই ইমেইল পড়ে। তাই মোবাইল উপযোগী না হলে ইমেইল রেসপন্স কমে যাবে।


শুধু সেলস পিচ পাঠানো, ভ্যালু না দেওয়া:
বারবার শুধু বিক্রির কথা বললে পাঠক বিরক্ত হয়। মাঝে মাঝে শিক্ষামূলক বা সমস্যার সমাধানমূলক কনটেন্ট দিতে হবে।


Unsubscribe অপশন না রাখা:
পাঠককে ইমেইল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ না দিলে সেটা GDPR বা ইমেইল মার্কেটিং নীতিমালার লঙ্ঘন হতে পারে।


ইমেইল লিস্ট সেগমেন্ট না করা:
সবাইকে একই ধরণের ইমেইল পাঠালে অনেকেই সেটিকে প্রাসঙ্গিক মনে করবেন না। অডিয়েন্স অনুযায়ী আলাদা গ্রুপ করে ইমেইল পাঠানো দরকার।


সঠিক সময় না দেখে ইমেইল পাঠানো:
যখন-তখন ইমেইল পাঠালে তা হয়তো ইনবক্সেই থাকবে, কিন্তু কেউ দেখবে না। টাইমিং ঠিক না হলে রেসপন্সও কমে যায়।


রিপোর্ট, ওপেন রেট বা পারফরম্যান্স ট্র্যাক না করা:
আপনার ইমেইল কতজন ওপেন করেছে, ক্লিক করেছে—তা না দেখলে আপনি বুঝতেই পারবেন না কোন কনটেন্ট কাজ করছে আর কোনটা নয়।


গুগল থেকে ইমেইল কালেক্ট করার সেরা উপায়



আমরা সাধারণত বিভিন্ন উপায়ে ইমেইল সংগ্রহ করে থাকি—যেমন: ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে, ইউটিউব ভিডিও থেকে ট্রাফিক নিয়ে, অথবা ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রিপশন ফর্ম যুক্ত করে। তবে এইসব পদ্ধতির বাইরে আরও কিছু উপায় রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ইমেইল কালেক্ট করা হয়, যদিও সেগুলোর অনেকটাই সময়সাপেক্ষ বা অর্থ ব্যয়সাপেক্ষ।


উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ফেসবুক অ্যাডসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্স থেকে ইমেইল সংগ্রহ করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞাপন চালাতে অর্থ ব্যয় করতে হবে। এই ধরনের ক্যাম্পেইনগুলো ফলপ্রসূ হলেও সবার জন্য বাজেট উপযোগী নাও হতে পারে।


কিন্তু আপনি যদি একেবারে ফ্রি বা কম খরচে ইমেইল কালেক্ট করতে চান, তাহলে একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে গুগল থেকে ইমেইল সংগ্রহ করা


এই কাজটি করতে হলে আপনাকে প্রথমে কিছু নির্দিষ্ট ব্রাউজার এক্সটেনশন বা টুলস ব্যবহার করতে হবে, যেগুলো ইমেইল খুঁজে বের করতে সাহায্য করে।


এই কাজটি করার জন্য আপনি গুগল ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এতে এক্সটেনশন ইনস্টল করা এবং ব্যবহারের প্রক্রিয়া খুব সহজ এবং কাজও দ্রুত সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে আপনাকে কিছু ইমেইল এক্সট্রাকশন এক্সটেনশন ব্রাউজারে যোগ করতে হবে। এর মধ্যে জনপ্রিয় এক্সটেনশনগুলোর নাম হলো — Email Extractor, GetProspect, Snov.io ইত্যাদি।


আরও পড়ুনঃ ড্রপশিপিং বিজনেস থেকে ইনকাম করার সহজ ৩ টি উপায়


এরপর, যাদের ইমেইল সংগ্রহ করতে চান, তাদের কার্যক্ষেত্র বা পরিচিতি অনুসারে সার্চ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি নিউ ইয়র্কের রেস্টুরেন্ট মালিকদের ইমেইল খুঁজতে চান, তাহলে সার্চ বক্সে লিখুন—“restaurant New York contact”।


সার্চ ফলাফলের পৃষ্ঠায় স্ক্রল করতে থাকুন, এক্সটেনশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই পেজ থেকে ইমেইলগুলো সংগ্রহ করতে থাকবে। এভাবেই সহজেই এবং দ্রুত আপনার কাঙ্ক্ষিত ইমেইল লিস্ট তৈরি হয়ে যাবে।

Next Post Previous Post